Skip to main content

ভূল করেছি ছাত্র জীবনে ভালবেসে - পার্ট ১

ঘুম ভাংছে সকালের মিষ্টি রোদের আলো চোখে পরার মাধ্যমে। দাত ব্রাশ করে নাস্তা খেয়ে আমি ফোনটা হাতে নিয়ে আকাশকে ফোন দিলাম। ফোনোলাপ সেরে একটা ডাইরি হাতে নিয়ে ঝন্টু মামার চায়ের দোকানে আসি। আমি নিয়মিত এখানে এসে সকালে সিগারেট না পান করলে সকাল টাই শুভ হয়না। জানিনা কতটুকু সত্য। সকালের কাজ শেষ। শালার আকাশ ফালতুটা এখনো আসছেনা কেন। আবার একটা ফোন দিলাম "কিরে হারামি তরে না কইলাম জলদি আয়া পর ক্যামনে কি করেসাই বুজবার পারলাম না।"

ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো মিষ্টি মেয়েলি কন্ঠ
" আকাশ ভাইয়া ফ্রেশ হচ্ছে আপনিকে?"
বাশ একটা খাইলাম বটে। আমি জানি আকাশের কোন বোন নাই হালায় বাপের একমাত্র পুলা তয় হেইডা কে?।
মেয়েটি- " আর শুনুন আকাশ ভাই হারামিনা কথাটা মনে রাখবেন, আপনারা শিক্ষিত মানুষ হয়ে রাস্তার লোকদের মত কথা বলেন কেন?"
নে বাবা কি এমন দোশ করলাম আমিতো আমার বন্ধুরে কইছি হেয়েেছ ক্যাডা। যাকগা ঝারি খাওয়ার জা খেয়ে ফেলেছি কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলাম। সিগারেট আর চা আরেক বারের জন্য অডার দিয়ে ঝন্টু মামার দোকানের মাচায় বসলাম। কিছুসময় পরে ফোনটা বেজে উঠলো। ফোন রিসিভার করে বললাম "
ঝন্টু মামার দোকানে আয় "
বলে ফোন কেটে দিলাম। কিছু সময় পর আকাশ আসলো "চল বন্ধু তাড়াতাড়ি রুমি অপেক্ষা করছে।" রুমি আকাশের প্রেমিকা।
"তুই বয় কথা আছে " আমি আকাশকে বললাম। "যেতে যেতে কথা হবে।" আকাশ উত্তর দেয়।
আমি বিড়ির টানটা শেষ করে হাটা ধরলাম। যেতে যেতে কথা হল আকাশের বাসায় কে আসছে কি করে ইত্যাদি। জানলাম মেয়েটি তার দুর সম্পর্কের খালাতো বোন। কলেজে এ্যডমিশন দিতে হবে কোচিং করার জন্য মাস তিনিক থাকবে। গল্প করতে করতে দুজন ক্যাম্পাসে চলে এলাম। শালাতো রুমির সাথে ভাগবে এখনি ক্লাস করার জন্য আমিতো আছি। দুর থেকে মেয়েলি ধ্বনি শুনলাম।
"এ্যই যে স্বপ্ন ভাইয়া "
পিছনে তাকাবার আগেই বুঝলাম রুমি।
"যা আমার আর দরকার নাই বৌদি ডাকে।" আকাশকে বললাম। রুমিকে শুধু বললাম যাচ্ছে। বলতেই আকাশ গেলগা। ধুর ক্লাসে মন বসে না।
"কি মেয়েটি কথা নাই কিছু নাই ঝারি দিয়ে দিল নাহ" মনে মনে ভাবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাল ছাত্র হিসাবে নাম বরাবরি ছিল আমার। যা হোক ক্লাস শেষে বাসায় এলাম।
রাতের আকাশে আজ পূর্নিমার আলো। বাসার বারান্দায় বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। ভালই লাগছিল। মনটা কেমন জানি শীতল আর চনমনে হচ্ছে। কোন গালফ্রেন্ড ছিলনা তাই কারো সাথে এই মুহূর্তে সুখটা ভাগাভাগি করতে পারি নাই। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো।
আকাশের ফোন রিসিভ করলাম "কিরে এতো রাতে রুমির কাছে ফোন না করে আমার কাছে কেন?"
" Sorry ভাইয়া সকালের ব্যবহাররের জন্য। আকাশ ভাই সব বলছে আমাকে। আপনি যা শাস্তি দেন মাথা পেতে নেব। "
আমি বললাম "ঠিক আছে।" বেশ কিছুক্ষন কথা হল। কলির সাথে। ফোনটা রেখে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে ক্যাম্পাসে যাবার সময় আকাশ ফোন দিল "দোস্ত একটু বাসায় আবি?"
"আচ্ছা আইতাছি "বলে ফোনটা রেখে দিলাম। আকাশের বাসার দরজায় নক করতে খালাম্মা দরজা খুলে দিল। আকাশের বেড রুমে গিয়ে দেখি আকাশ শুয়ে আছে। ওর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। একটি মেয়ে বয়স হবে ১৭হতে ১৯ বছর। মুখের রং ফর্সা। হালকা পিংক রঙের কামিজ পরে আছে, একদম সাদা সিদে মনে হচ্ছে। এক পলকে তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। চোখ ফেলাতে পারছিলাম না। আকাশের জ্বর হয়েছে একটু বেশি। খালাম্মা ঘরে এসে আমাকে বললো,
"বাবা আকাশের যে জ্বর তাতে ও দাড়াতে পারছে না। কলির আজ UCC তে ভর্তি করতে হবে মেয়েটাকে নিয়ে যাবে কে, তুমার খালু অফিসের কাজে চট্টগ্রাম গেছে আমি তো পারিনা না, আকাশ অসুস্থ। কিছু যদি না ভাবো মেয়েটারে একটু নিয়ে যাবা?"
খালাম্মা আমাকে বেশ স্নেহ করে ঢাকা শহরে আমার কেউ নাই। মেস এ থাকি। কি ভাবলাম বললাম,
" ঠিক আছে।"
কলি ততক্ষনে সম্ভত নিজের রুমে গেছে, আমি আকাশের পাশে বসে ওর মাথায়ছ হাত বুলিয়ে দিলাম। রুমি জানে, "দোস্ত তুই অসুস্থ?" আকাশকে বললাম।
" নারে দোস্ত মেয়েটা সারাদিন চিন্তা করবে,খাওয়া দাওয়া ছেরে দেবে। তাই আরকি? "বুঝলাম কথা গুলো খুব কষ্ট করে বলেছে আকাশ।
"থাক দোস্ত তুই শুয়ে থাক" আমি আকাশের মাথার পাশে বসে আছি। মাঝে মাঝে হিংসা হয় আকাশ আর রুমির ভালবাসা দেখে, আর নিজেকে মনে হয় অতি নগন্য। শালার আজ ২২-২৪ টা বছর বয়স হল প্রেম কি, কোন মেয়েকে আজ পর্যন্ত ভালবাসি কথাটা বলতে পারি নাই।ভাবতে ভাবতে দরকার পাশ থেকে শব্দ এলো। বাস্তব জগতে ফিরে এলাম "এই যে আমি রেডি। "
আকাশ আমাকে যাওয়ার জন্য ইশারা দিল। আমি কেন জানি বাধ্য ছেলের মত মেনে নিলাম।
আমি আর কলি বাসা থেকে বেরিয়ে পরলাম। একটা রিক্সা নিলাম ফার্ম গেট পর্যন্ত। কলিকে আমার পাশে বসতে দিলাম। কলি একটা হলুদ পোশাক পরেছে, ওর শরীরে পার্ফিউম মারা। কেন জানি আমি কোন রাজ্যে চলে গেলাম। এতক্ষন একটি কথাও বলিনি। শুধু ওর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইচ্ছা করছিল, কিন্তু ওর চোখে চোখ রাখতে পারলাম না।
"এই যে আপনি কি গাল ফ্রেন্ড নিয়ে ভাবছেন? "
মনে হয় কলি হঠাৎ করে কথাটা বলে ভেলেছে আমি বাস্তব জগতে ফিরে দেখি কলি লজ্জা পেয়েছে। আমি কথা বলি নাই। কলিও চুপ চাপ। আধা ঘন্টা পর কোচিং এর সামনে এলাম। মেয়েটি আমার চেয়ে এ্যডভান্স। দুজনে নামি রিক্সা থেকে। কলিকে কোচিং এ ভর্তি করে তার ক্লাস রুম দেখিয়ে দিলাম।
কলি আমাকে  বলল," আমি কি একা বাসায় যাব?"
আমি শুধু বললাম "না"----(চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

আধুনিকতা ও বিবেক।

সময়টা ছিলো ০৮/১২/২০১৫ খ্রি: সকালে ঘুম থেকে উঠে শারীরিক অসুস্থ্যতার জন্য গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ডাক্তার দেখিয়ে হাটতে হাটতে বাসায় ফিরছিলাম। রুপশি বাংলা হোটেলের সামনে রাস্তার অপর পাশে পাম্পের এক কোনায় দেখলাম কিছু লোকের জটলা। আমি বরাবরই সন্দেহ প্রবন, উৎসুক প্রকৃতির ব্যাক্তি হওয়ায় ভিড় ঠেলে জটলার মধ্যে প্রবেশ করলাম। কোন এক ভদ্র ঘরের ৬০ উর্দ্ধ ব্যাক্তিকে ঘিরে কিছু লোক কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করছে। পাশে দাড়িয়ে এক রিক্সাওলা আকুতি মিনতি বলছে -"স্যার আমার ভাড়াটা না দেন, আসল টাকাতো দিবেন"। আমি আরো উৎসুক হয়ে মনোনিবেশ করে বৃদ্ধের দিকে তাকাই একবার,জনতার দিকে তাকাই একবার আবার রিক্সাওলার দিকে তাকাই। ভদ্র লোকটার বয়সের ভারে চামড়া গুছিয়ে গেছে। ফর্সা চেহারার ৬০ উর্দ্ধ লোকটার পরনে ছিলো সাদা শার্ট, কালো ফুল প্যান্ট। আমি জনৈক ব্যক্তিকে প্রশ্ন করলাম -"দাদা হইছেটা কি"? <script type="text/javascript"> atOptions = { 'key' : '52183264363c1353bf766b5445dc6bc8', 'format' : 'iframe', 'height'...

ভুল করেছি ছাত্র জীবনে ভালোবেসে পার্ট-২

  কেন  জানি মনে হল ওকে একা একা বাসায় যেতে দেওয়াটা ভাল দেখায় না, কারন আকাশ সুস্থ থাকলেতো ওকে নিয়েই যেত। যা হোক বিষয় টা ভালই লাগছিল আমার। কলি যতক্ষন না ফিরে ততক্ষনে আমি একটু পাশের দোকানে বসে চা বিড়ি পান করিগে। কলিকে দেখে আমার ভিতরে কেমন একটা হেঁচকা টান অনুভব করছি কেন জানিনা, জানার প্রয়োজনো নাই। মোটামোটি প্রায় ২টার সময় কলির কোচিং শেষ হবে। আমি বাধ্য অভিবাকের মত অপেক্ষা করতে লাগলাম। কলির কোচিং শেষ হয়েছে হয়তো দশ মিনিট হবে। আমার মনে ছিল না হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো অপরিচিত নাম্বার রিসিভ করলাম। শুধু এটুকু বললো, " আমি চলে যাব? " বুঝলাম কলির ফোন। সবে মাত্র সিগারেটটা শেষ করেছি। ধুর কি ভাববে কলি পাশাপাশি বসলে তো গা দিয়ে সিগারেটের গন্ধ পাবে। নে বাবা কি করি। যা ভাবার ভাববে আমি কি কলির কিছু হই? আপন মনে ভাবনা এল। আবার ভাবলাম কি আবোল তাবোল ভাবছি। যা হোক কলির কাছে গেলাম, রিক্সা নিয়ে আকাশের বাসায় ফিরছিলাম। কোন কথা নাই আমার মুখে। কলি বললো- "আপনি সুন্দর মেয়েদের বেশি পছন্দ করেন তাই না?" আমি কিছুটা ভয় পেলাম, চারিদিকে তাকালাম রাস্তার কোন মেয়ের দিকে তাকালাম কি? কই না তাকাই নি। আমি বললাম,...

নির্ঘুম রাত শেষে দিনের আলো কবে আসবে?

অনেক হল, এবার বুঝি আপনার আমার পালা। আগে ছিল প্রতিটি রাত হয়তো নির্ঘুম যেত। কিন্তু এখন রাত দিন কোন সময়কে বিশ্বাস করতে পারবোনা। মনে হয় এই বুঝি ধারাল স্বশস্ত্র হয়ে আমার মন্ডুটাকে বিভৎসভাবে ধর থেকে আলাদা করে দিবে। আগে দেখেছি চোর ডাকাত তাদের কাজের জন্য রাতকে প্রাধন্য দিতো। গ্রামের মানুষদের রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিতে দেখেছি, চোর ডাকাত যেন না আসে। কিন্তু এখন রাত দিন পাহাড়া দিতেও দেখায় যায়। ঐ যে সারিবদ্ধ লাশ কেন তারা কথা বলে না। তারা কফিনে বন্ধি, চিতায় জ্বলে, দাফনে মাটিচাপায় পড়ে থাকে। কিছু করার নাই। সুর্য উঠছে কিন্তু আলো দিতে পারছে না। মেঘের কালো ছায়ায় বন্ধি। আলোর দিশা পাবার আগে কালো মেঘেরা বন্ধি করে দিচ্ছে সেই সূর্যের আলো। কেন? উত্তর আপনারো নেই আমারো নাই। উত্তর নেই তা নয় হারিয়ে ফেলেছি মেঘকে সরিয়ে প্রকৃত আলোর সন্ধানে বের হওয়ার ক্ষমতা। হারিয়ে ফেলেছি সেই সাহস, যেটা পূজি করে বাশের লাঠি হাতে নিয়ে নেমেছিল বীর বাঙালী শত্রুকে মোকাবেলার জন্য। দেশের প্রতিটি মানুষ আজ মেঘের হাতে বন্ধী। মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাঁসে। সূর্য হেসে করবে কি? যদি মেঘকে সবাই ভয় পায়। মুক্তচিন্তাকরা পাপ মহা পাপ। কার...

বিদ্রহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর সমাধী।

গায়ে হলুদের মেহেদী ডিজাইন। Mehndi designs.